আজ বুধবার | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১১:৫০
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ -ঝিনাইদহে কথিত কবিরাজদের দৌরাত্ব থামছে না। ঝাঁড়-ফুকের মাধ্যমে জ¦ীন তাড়ানো থেকে শুরু করে ক্যানসার, বন্ধ্যাত্বসহ জটিল নানা রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন এসব কবিরাজরা। কথিত এসব কবিরাজদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসার নামে রোগীদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। আর চিকিৎসকরা বলছেন, ভন্ড কবিরাজদের এমন আজগুবি চিকিৎসায় মানবদেহে বড় ধরনের জটিলতার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ফলে সবার আগে সচেতনতা দরকার। শরীরে দুষ্ট জ¦ীনের আবির্ভাব কিংবা কারো সন্তান হচ্ছে না, কেউ প্যারালাইসিসে কিংবা ক্যানসার আক্রান্ত। এমন নানা জটিল রোগাক্রান্ত ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার মানুষ দারস্থ হচ্ছেন কবিরাজের। সেখানে লাঠির মাথায় আগুন ধরিয়ে তাড়ানো হচ্ছে ভূত। পানিপড়া কিংবা শিকড়-বাকড়ে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। জেলা সদরের পোড়াহাটি, সাধুহাটি, শৈলকুপার ফলিয়া বটতলা, দেবীনগর, মহেশপুরের রামচন্দ্রপুর ও গাড়াবাড়িয়া, নাটিমাসহ প্রতিটি উপজেলাতেই রয়েছে অন্তত অর্ধশত এমন কবিরাজের আস্থানা। তবে এসব চিকিৎসায় জড়িত কবিরাজদের দাবি, আমাদের থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর যাদের সন্তান ডেলিভারী হচ্ছিলো না তার ডেলিভারী হয়েছে। অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা আমরা করেছি যার প্রমাণ আছে। শৈলকুপার এক কবিরাজী চিকিৎসা নিতে আসা এসব মানুষ জানান, খুশি হয়ে দুই হাজার টাকা দিয়েছি। তারা চায়না যে যা দেয় তাই নেয়, কেউ কেউ ৭ হাজার বা ১০ হাজার টাকা দেয়। শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, অনেক দিন মাথার সমস্যায় ভুগছেন এ কারণে এখানে এসেছেন। আরেক ব্যক্তি জানান, তার নাকে সমস্যার কারণে এখানে এসেছে। তিনি জানান নাখের মধ্যে মেডিসিন দিয়ে নাক পরিস্কার করে দিয়ে বললো সাত দিনের মধ্যে আল্লাহ রোগ মুক্তি করবে। স্থানীয় গ্রামের সাধারন মানুষ জানান, যশোর মাগুরা কুষ্টিয়া রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ এ জেলার বিভিন্ন কবিরাজী চিকিৎসা নিতে আসেন। তারা ভালো হয় কিনা জানি না। তবে মাঝে মধ্যে শুনি কেউ ভালো হয়েছে আবার কেউ হয় নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শৈলকুপার এক কবিরাজ জানান, এখানে যারা আসে তাদেরকে আল্লাহর কালাম আর গাছ গাছরা দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। যেমন ধরেন কারো লিভারের সমস্যা আমি চিকিৎসা দেয়ার পরে সে ভালো হয়ে যায়। কারো বাচ্চা হচ্ছে না চিকিৎসা করার পরে বাচ্চা হলো। গতকাল আমার সাথে দেখা ককরতে এসেছিল ছেলে সন্তান হয়েছে এমন এক নারী। এই কবিরাজের দাবি এখনো পর্যন্ত কোন রোগী বলেনি যে আমার থেকে চিকিৎসা নিয়ে উপকার হয়নি। ডাক্তারদের প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। আমি নিজেও ডাক্তারের কাছে যায়। দুই দিন আগে শৈলকুপার হাসপাতালের দুই ডাক্তার এসেছিল আমার কাছে। কবিরাজের কাছে ডাক্তার আসবে ডাক্তারের কাছে কবিরাজ যাবে এতে অসুবিধা কি? ঝিনাইদহ মানবাধিকার কর্মী শরিফা খাতুন জানান, জেলায় বিভিন্ন সময়ই এমন আজগুবি ঘটনার আবির্ভাব হয়। কোথাও পানিপড়া কিংবা কলের পানিতে রোগ সারছে এমন। এ গুলো প্রতিকার করার দরকার ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসক ডাঃ প্রসেনজিৎ বিশ^াস পার্থ জানান, এসবে শরীরে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে তৈরি হতে পারে আরো জটিলতা। তাই মানুষের সচেতন হওয়া সব থেকে বেশী জরুরী। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, কবিরাজরা ডাক্তারের সমকক্ষ মনে করে মানুষের সাথে অব্যাহত প্রতারণা করে যাচ্ছে। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান পরিচালিত হবে।
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:19 PM |
Isha | 6:40 PM |